
টেকআলো প্রতিবেদক:
গ্রাহক পর্যন্ত সংযোগ স্থাপনে ঝুলন্ত তারের বিকল্প ব্যবস্থা না করে তার কাটা হলে ইন্টারনেট ও ডিস সংযোগ বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে আইএসপিএবি এবং কোয়াব।সমস্যা সমাধানে ৫ দফা দাবি দিয়ে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত আল্টিমেটাম বেধে দিয়েছে সংগঠন দুটি।আর এ সমস্যার সমাধান না করা হলে ১৮ অক্টোবর রোববার হতে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সারাদেশে বাসা-বাড়ি, অফিস ও ব্যাংকসহ সকল পর্যায়ে ইন্টারনেট ডেটা কানেক্টিভিটি এবং ক্যাবল টিভি বা ডিস বন্ধ রাখার প্রতীকী কর্মসূচি করবে তারা।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে এসব ঘোষণা দেয় ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এবং ক্যাবল অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)। ৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, লাস্ট মাইল ক্যাবল বা গ্রাহক পর্যন্ত সংযোগের স্থায়ী সমাধান না করা পর্যন্ত কোনো ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণ যাবে না, আইএসপিএপি, কোয়াব, বিটিআরসি, এনটিটিএন এবং সিটি করপোরেশন সমন্বয়ে লাস্ট মাইল ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করণে একটি কমিটির মাধ্যমে সরেজমিন তদন্তের ব্যবস্থা করা।এছাড়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাসা-বাড়ি, অফিস ও ব্যাংকসহ সকল পর্যায়ে ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সেবার মূল্য নির্ধারণ, গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সেবা স্বল্পমূল্যে দিতে এনটিটিএন এর মূল্য সরকারের নির্ধারণ এবং গ্রাহক পর্যায়ে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদানের নিশ্চয়তার পক্ষে এনটিটিএনগুলো সার্বিক সক্ষমতা আছে কিনা তা যাচাই।
সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, বিকল্প ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত আমাদের অনুরোধ ক্যাবল কাটা বন্ধ রাখার জন্য। তা না হলে সমস্যা সমাধানে ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চলতি বছরের আগস্ট হতে আইএসপি ও ক্যাবল টিভি অপারেটরদের কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই প্রধান সড়কসহ সকল সড়ক হতে ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণ করা শুরু করা হয়। এতে গত দুই মাসে আনুমানিক ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে আইএসপিএবি ও কোয়াবকে।সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণে সিটি করপোরেশেনের সিদ্ধান্তকে আইএসপিএবি ও কোয়াব সাধুবাদ জানায় তবে সেই সঙ্গে কোনো আগাম নোটিশ না দিয়ে, কয়েক লাখ ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি গ্রাহকের সেবা নিশ্চিত না করে কোটি কোটি টাকার ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণ কোনো যৌক্তিক সমাধান নয় বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করে সংগঠন দুটি।তারা বলছেন এর ফলে কয়েক লাখ ইন্টারনেট ও কেবল টিভি গ্রাহক যেমন ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন একইসঙ্গে চলমান অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত হবে কয়েক লাখ শিক্ষার্থী। পাশাপাশি এসব এলাকায় করোনায় সেবাদাতা হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ অনলাইন স্বাস্থ্যসেবাও বিঘ্নিত হচ্ছে এবং হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠন দুটি নেতারা বলছেন, বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের ইন্টারনেট ও ক্যাবল সংযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এই মহারীর সময়ে বেকার হয়ে পড়বেন ১০০০টি বৈধ আইএসপি ও কোয়াবের প্রায় লক্ষাধিক কর্মীসহ ৩৩টি স্যাটেলাইট টিভিতে কর্মরত অসংখ্য সাংবাদিক ও কর্মীরা।আইএসপিএবি সভাপতি বলেন, ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণের পর প্রায় কয়েক লাখ বিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সংযোগ পুনঃস্থাপন ও সংযোগের জন্য স্থায়ী ক্যাবল ব্যবস্থা বিষয়ে কোনো প্রকার সমাধান না করেই প্রতি আইএসপির জন্য ২৫ লাখ টাকা করে বাৎসরিক নিবন্ধন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। যা কোনোভাবেই যৌক্তিক বলে মনে করেন না তারা। এর ফলে নিবন্ধিত বৈধ ইন্টারনেট সেবাদাতা সংস্থাগুলো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে এবং আইএসপিগুলো মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে।তিনি বলেন, প্রতি ২০০ মিটার পরপর এলডিপি (লোকাল ডিসট্রিবিউটর পয়েন্ট বা পিওসি-পয়েন্ট অব সেল) বসানো উচিত হলেও মাঠ পর্যায়ে করা জরিপে দেখা যায়, এনটিটিএন তা বসিয়েছে প্রায় ১-২ কি.মি পরপর। এতে ২০০ মিটারের জায়গায় ক্যাবল টানতে হচ্ছে ১-২ কি.মি। যাতে মূল লক্ষ্য শহরের সৌন্দর্য বর্ধনও নষ্ট হচ্ছে।সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক, কোয়াবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজসহ সংগঠন দুটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।