‍”করোনা বিশ্বকে ডিজিটাল হওয়ার সর্বোচ্চ প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উপলব্ধি করিয়েছে”

টেকআলো প্রতিবেদক:
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন,বিদ্যমান ডিসরাপটিং উদ্ভাবন ইতিমধ্যে শারীরিক, ডিজিটাল এবং জৈবিক বিশ্বের মধ্যেকার সীমারেখা পাল্টে দিয়েছে। ৫জি ইন্টারনেট, ইন্টারনেট অফ থিংস, বিগডেটা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা,রোবোটিকস, সাইবার-ফিজিক্যাল সিস্টেমস, মেশিন লার্নিং, থ্রিডি- প্রিন্টিং, ন্যানো টেকনোলজি এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়াারিং প্রযুক্তির উন্নয়ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সোপান। এজন্য সমন্বিত উদ্যোগে ডিসরাপটিং ডিজিটাল প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও প্রয়োগে লাগসই পরিকল্পনা প্রয়োজন। করোনা মহামারী ইতোমধ্যে আমাদের ডিজিটাল হওয়ার সর্বোচ্চ প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি বিশ্বকে উপলব্ধি করিয়েছে। এসডিজি বাস্তবায়নের বিদ্যমান সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য ডিজিটাল রূপান্তরের সক্রিয় ভূমিকা এখন আগের চেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে। বাংলাদেশই প্রথম দেশ যেখানে নিজেকে ২০২১ সালের স্বপ্নের সাথে ডিজিটাল জাতি হিসাবে ঘোষণা করেছিল। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দূরদর্শিতার জন্য মহামারীতে বাংলাদেশের মানুষের জীবনকে আরও সহজ করে তুলেছে।

মন্ত্রী আজ সোমবার অন-লাইনে আইটিইউ রিজিউনাল ডেভলপমেন্ট ফোরাম ফর এশিয়া- প্যাসিফিক রিজন-২০২০ লিডারশীপ ডায়ালগে ডিজিটাল বিকাশ এবং এসডিজির দিকে অগ্রগতি অর্জনে ক্রস-সেক্টরিয়াল সহযোগিতা বিষয়ে বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ভানুয়াতুর প্রধানমন্ত্রীসহ মঙ্গোলিয়া, ভুটান, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের প্রতিনিধিগণ বক্তৃতা করেন। আইটিইউ এর এশিয়া প্যাসিফিক রিজনের আঞ্চলিক পরিচালক অসতকো ওকোডা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারীকে বিশ্বের বহু দেশের জন্য এসডিজি অর্জনের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ২০৩০ সালে বিশ্ব জনসংখ্যার ৬% চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করবে বলে যে ধারনাটি ছিল করোনা তা অনেকটাই পাল্টে দিচ্ছে। । এর প্রভাবের কারণে অতিরিক্ত ৭১ মিলিয়ন মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থাকতে পারে। এ দিকে থেকে এসডিজি ১ এর অর্জন অবশ্যই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। একইভাবে কোভিড জনিত কারণে এসডিজির ১৭ পর্যন্ত সবগুলো অভিষ্ট্য লক্ষ্য অর্জন ব্যাহত হবে বলে মন্ত্রী পৃথক পৃথকভাবে সে সবের যৌক্তিকতা তার বক্তৃতায় তুলে ধরেন। তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, কোরোনার বিরূপ প্রভাব সত্ত্বেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও প্রজ্ঞাবান নেতৃত্বে বাংলাদেশ এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় অনেক ভাল করবে। কোভিড বিপর্যয়ের মধ্যেও বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশের সফলতাই এর বড় প্রমাণ বলে মন্ত্রী তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন। মন্ত্রী গত এগারো বছরে বাংলাদেশের সফলতা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর লাভ করছে। বাংলাদেশ গত দশকে গড়ে অব্যাহতভাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি শতকরা ৭ ভাগেরও বেশী অর্জন করেছে। জিডিপির দিক থেকে বিশ্বের ৪২তম অর্থনৈতিক এবং ক্রয়ক্ষমতার সক্ষমতার দিক থেকে ৩১তম অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

২০০৯ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের যাত্রা শুরু করার পর থেকে বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিশ্বের নবম এবং এশিয়ার পঞ্চম বৃহত্তম মোবাইল বাজার। বর্তমানে দেশে ১৬৬ মিলিয়ন মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী রয়েছে যা মোট জনসংখ্যার শতকরা ১০১ ভাগ। দেশে ১০ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জাতীয় ডিজিটাল আর্কিটেকচার বাস্তবায়ন শুরু করেছে এবং ডিজিটাল অবকাঠামো এবং পরিষেবাগুলির মধ্যে সমস্ত সেক্টরকে একীভূত করার জন্য কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে।