১৪ অক্টোবর শুরু হচ্ছে ‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো’

টেকআলো প্রতিবেদক:
দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সর্ববৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী ‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯’। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু্ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে তিন দিনব্যাপি এই প্রদর্শনী যৌথভাবে আয়োজন করছে আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, আইডিয়া প্রকল্প এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস)। প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় প্রধান অতিথি হিসেবে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন।
১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজারস্থ জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি। এসময় প্রদর্শনীর বিস্তারিত তুলে ধরে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম এনডিসি ও আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক সৈয়দ মজিবুল হক। প্রদর্শনীর পরিকল্পনা সম্পর্কে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেনটেশনে সম্যক ধারণা দেন বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর।
সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেন, এই প্রদর্শনীতে শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনকে গুরুত্ব দেয়া হবে। পাশাপাশি যেসব দেশীয় প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদন করছে, তাদের জন্য থাকবে আলাদা জোন। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ কোনো স্বপ্ন নয়, বরং বাস্তবতা। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা আমরা সবাই ভোগ করছি। প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের সমৃদ্ধ করে আমরাও উন্নতির মহাসড়কে অগ্রসরমান। তিনদিনব্যাপী এই মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বিনামূল্যে এই প্রদর্শনীতে প্রবেশের সুযোগ থাকলেও অনলাইনে নিবন্ধন বা স্পট রেজিস্ট্রেশন করে প্রবেশ করতে হবে।
প্রদর্শনীর বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপোতে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি জ্ঞানকে বাড়িয়ে নেয়ার জন্য নানা সেমিনারের আয়োজন করা হবে। থাকবে নিত্যনতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ স্লোগানে এবারের প্রদর্শনীতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি পণ্য প্রদর্শন করা হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে প্রযুক্তিতে সক্ষমতা প্রদর্শনে এখনকার তরুণরাই হবে ভবিষ্যত অগ্রদুত। উন্নয়নশীল দেশ থেকে আমরা নিজেদের উন্নত দেশের বাসিন্দা হিসেবে শিগগির দাবি করতে পারবো বলে আমরা আশাবাদি।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, জনসচেতনতা সৃষ্টি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যবান্ধব পরিবেশ তৈরি, তরুণদের অংশগ্র্রহণ বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ ও উদ্যোক্তা তৈরি করতে সহায়ক হবে ‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো ২০১৯’। এবারের মেলায় বিভিন্ন দেশ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ী, প্রতিনিধি এবং স্পিকাররা অংশ নিবেন। পৃথিবীর নামকরা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিভিন্ন দেশীয় প্রতিষ্ঠানের বিটুবি অনুষ্ঠিত হবে। এতে দেশের প্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনা আরও বাড়বে।

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম এনডিসি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর অনেক দেশের রোল মডেল। প্রযুক্তির প্রদর্শনী নিজেদের সক্ষমতা প্রকাশ করে। দেশে এখন হাই-টেক পার্কের সফলতা দৃশ্যমান। হাই-টেক পার্কের কল্যাণে জেলা উপজেলা এমনকি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষরাও প্রযুক্তির সুফল পাচ্ছে । এক্সপো থেকে আমাদের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হবে। ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য এখন থেকেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। ফোরজি প্রযুক্তি ছাড়িয়ে পৃথিবী এখন ফাইভজি প্রযুক্তির দিকে ধাবমান। দ্রুত বদলে যাওয়া প্রযুক্তি বিশ্বের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে এই এক্সপো মাইলফলকের ভূমিকা রাখবে।
আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক সৈয়দ মজিবুল হক বলেন, এক্সপোর নামকরণ দেখেই বোঝা যায় এবারের প্রদর্শনীকে আমরা নিত্যনতুন আবিষ্কার এবং উদ্ভাবন দিয়ে সাজিয়েছি। সারাদেশে থেকে শিক্ষার্থীদের সেরা উদ্ভাবনগুলো এখানে প্রদর্শন করা হবে। সনামধন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশে দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের নাম দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করবে। পৃথিবী জানবে ছোট এই দেশটিও প্রযুক্তিতে দ্রুত এগিয়ে চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক্সপোর নলেজ পার্টনার হিসেবে কাজ করছেন। যাদের কাছে আমাদের আশা ভরসা, তারাই সপ্রণোদিতভাবে এই এক্সপোর অংশ। প্রযুক্তির আশীর্বাদ প্রতিটি মানুষের জীবনকে সহজ করছে।
পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে এক্সপোর পরিকল্পনা তুলে ধরে বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি দেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই সংগঠনটি বরাবরের মতো তথ্য প্রদর্শনীর আয়োজন করে আসছে। এবারের আয়োজনে আমরা ভিন্নতা এনেছি। ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড এক্সপো ২০১৯ এর আয়োজক হিসেবে আমরা প্রদর্শনীকে দর্শনার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। প্রদর্শনীতে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নামকরা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সর্বশেষ উদ্ভাবন এবং ডিভাইস প্রদর্শন করবে। মেলায় থাকবে নানা আকর্ষণ। দেশ-বিদেশের প্রযুক্তি প্রেমীদের অংশগ্রহণে এই প্রদর্শনী স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
সংবাদ সম্মেলনে আইসিটি ডিভিশন, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, আইডিয়া প্রকল্প এবং বিসিএস এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।