শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের সেবাদানে “সাইন-লাইন”- ডিজিটাল কেয়ার চালু করলো গ্রামীণফোন

টেকআলো প্রতিবেদক:
নিজের ভাষায় কথা বলতে আমরা সবাই চাই। যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা ও ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি নানাভাবেই সমাজের নানা স্তরের মানুষকে সহায়তা করছে। আমাদের চারপাশে অনেক মানুষ রয়েছেন যারা কথা শুনতে ও বলতে পারেন না। তাদের সাথে যোগাযোগে সবাইকে ইশারা ভাষা শিখতে উৎসাহিত করতে ‘কথাগুলো হারিয়ে না যাক শব্দের অভাবে’ প্রতিপাদ্যে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে গ্রামীণফোন। এ প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠানটি ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর দ্য ওয়েস্টিন ঢাকা হোটেলে সাইন-লাইন ডিজিটাল কেয়ার উদ্বোধন করে। শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধীদের জন্য এ ডিজিটাল কেয়ারে সেবাও প্রদান করবেন শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা।
এ উদ্যোগের মাধ্যমে গ্রামীণফোন, এর ওয়েবসাইট ও্ সেলফ সার্ভিস ডিজিটাল কেয়ার অ্যাপ মাইজিপি’তে ইশারা ভাষা ভিত্তিক গ্রাহকসেবা চালু করেছে। এছাড়াও, ‘কথাগুলো হারিয়ে না যাক শব্দের অভাবে’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ইশারা ভাষা বিশেষজ্ঞ আরাফাত সুলতানা লতার প্রশিক্ষণে গ্রামীণফোনের ইউটিউব চ্যানেলে ইশারা ভাষার ভিডিও টিউটোরিয়াল আপলোড করা হয়েছে। যা আগ্রহীদের ইশারা ভাষা শিখতে প্রাথমিক সহায়তা করবে এবং তাদেরকে সুযোগ করে দিবে কথা বলতে পারেন না এবং কথা শুনতে পান না এমন প্রিয়জনদের সাথে যোগাযোগ করার।
ফেব্রুয়ারি আত্মত্যাগ ও অর্জনের মাস। বাংলা ভাষার জন্য একুশে ফেব্রুয়ারি মহান আত্মত্যাগেরর প্রতিশব্দস্বরূপ। এ আত্মত্যাগের কারণেই আজ সারাবিশ্বে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম ইশারা ভাষা অনেকের অজানা। গ্রামীণফোনের এ উদ্যোগ সহায়তা করবে আমাদের মূল ভাষার মতো এ ভাষার গুরুত্বকে সমাজে সবার সামনে নিয়ে আসতে।
অনুষ্ঠানে সমাজের প্রতি গ্রামীণফোনের দায়িত্ববোধের কথা উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, ‘সমাজের প্রতিটি মানুষের কাছে যোগাযোগ প্রযুক্তি অন্তর্ভূক্তির সুবিধা পৌঁছানো উচিৎ। গ্রামীণফোন এখন ৭৬.৫ মিলিয়ন গ্রাহকের পরিবার এবং আমাদের দায়িত্ব হলো আমাদের নেটওয়ার্কে সবাইকে সমভাবে সেবা প্রদান করা। এখনই সময় আমাদের ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তিকে আরও বিস্তৃত করার এবং এর মাধ্যমে প্রযুক্তির সুবিধা সবার কাছে পৌছে দেয়া। মাই জিপি-তে এবং গ্রামীণফোনের ওয়েবসাইটে ইশারা ভাষা ভিত্তিক সেবা ‘সাইন-লাইন’ অন্তর্ভূক্তি লাখো মানুষকে সেবা পেতে সহায়তা করবে।’
বাংলাদেশে লাখো শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী থাকলেও ইশারা ভাষা শেখার যথেষ্ট সুযোগ নেই। যে কারণে, বাকি মানুষের সাথে তারা ঠিকভাবে যোগাযোগ করতে পারছেন না। ইয়াসির আজমান আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের ভাষায় একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করছি, কিন্তু অসমতা দুর করতে হলে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজে যারা কথা বলতে পারেন না এবং কথা শুনতে পান তাদের জন্যও যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ইন্টারনেটের সাহায্যে আমরা অনলাইন ভিডিও টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে সহজেই এ ভাষা শিখতে পারি। এ ভিডিও টিউটোরিয়াল সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ শিখতে আগ্রহীদের এ ভাষা শেখার সুযোগ করে দিবে।’
ইয়াসির আজমান আরও বলেন, ‘ডিজিটাল অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ যাত্রায় আরো গুরুত্বর্পণূ অবদান রাখার মাধ্যমে সামাজিক ক্ষমতায়ণ বিস্তৃত করার এখনই সময়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২০ সালের ঠিক আগ মূহুর্তে ভাষার অসমতা দূর করতে যারা এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মটি গড়ে তুলতে সহায়তা করেছেন তাদের জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।”
অনুষ্ঠানে ইশারা ভাষা বিশেষজ্ঞ আরাফাত সুলতানা লতার নেতৃত্বে একুশের গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ ইশারা ভাষায় পরিবেশন করা হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হাসিব, হেড অফ মার্কেটিং নাফিস আনোয়ার চেীধুরী, হেড অব কমিউনিকেশনস খায়রুল বাশার এবং জনপ্রিয় অভিনেতা ও শিল্পী তাহসান খান।
সাইন ল্যাঙ্গুয়েজের ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখতে ভিজিট করুন: gpsocial.co/Sign_Language_Tutorial