মাইক্রোসফটের প্রযুক্তি ব্যবহার করে এআইইউবি’র ভার্চুয়াল ক্লাসরুম

টেকআলো প্রতিবেদক:
কোভিড-১৯ সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়েই শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে এর আগে কখনও দূরশিক্ষণ কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা এতো বেশি অনুভূত হয় নি। আর এ প্রয়োজনের ভিত্তিতে, এ প্রতিকূল সময়ে মাইক্রোসফট ৩৬৫ এডুকেশনের মাধ্যমে দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (এআইইউবি) তাদের তেরো হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ভার্চুয়াল পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নিরাপদ ও সুরক্ষিত এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মাইক্রোসফটস টিমসে ক্লাস টিমওয়ার্কের জন্য একটি কাস্টমাইজ হাব তৈরি করা হয়েছে, যেখানে ভিডিও মিটিংস ও অফিস ৩৬৫ অ্যাপগুলোর অনলাইন ভার্সন ও কমপ্লায়েন্স টুল রয়েছে।

মাইক্রোসফট ৩৬৫ ব্যবহারের মাধ্যমে এআইইউবি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পূর্ণাঙ্গ ও কার্যকর পদ্ধতি তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এবং অংশগ্রহণমূলক উপায়ে পাঠদান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। মাইক্রোসফট টিমসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিকভাবে ক্লাস পরিচালিত হওয়ার ফলে পুরো একটি সেমিস্টার অনলাইনেই শেষ হয়েছে।

এ নিয়ে এআইইউবির উপাচার্য ড. কারমেন জেড. লামাগনা বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর নতুন বাস্তবতায় শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখা আমাদের জন্য সহজ বিষয় ছিলো না। তবে, আমাদের অবকাঠামো ও মাইক্রোসফটের সমাধানগুলোর সাহায্যে আমরা চার দিনের মধ্যে তেরো হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের এ অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করতে পেরেছি। মাইক্রোসফট ৩৬৫ এডুকেশন আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। এ প্ল্যাটফর্মের সাহায্যে, আমরা এ সঙ্কটকালীন সময়েও শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সমন্বয় বৃদ্ধির জন্য তাদের সরাসরি ক্লাসরুমের অভিজ্ঞতা দিতে সক্ষম হয়েছি। মহামারি পরবর্তী সময়ে পদক্ষেপ হিসেবে অনলাইনে ও সরাসরি ক্লাস নেয়ার সমন্বয়ের মাধ্যমে আমাদের কার্যক্রম গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চাচ্ছেন কীভাবে আমরা নতুন এ পরিবর্তিত অবস্থার সাথে মানিয়ে নিয়েছি। অগ্রজদের চেয়ে তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তির সাথে যুক্ত করা তুলনামূলক সহজ। তবে, মাইক্রোসফটের কল্যাণে এটি আরও সুন্দরভাবে সম্ভব হয়েছ। আমরা মাইক্রোসফট টিমসের মাধ্যমে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি বোর্ড মিটিং, প্রশাসনিক মিটিং ও কাউন্সিল মিটিংও পরিচালনা করছি, যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটাল রূপান্তরকে ত্বরাণ্বিত করেছে।’

মাইক্রোসফট ৩৬৫ এডুকেশনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যুক্ত করতে প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে এআইউবি চারটি ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচি পরিচালনা করেছে। দূরশিক্ষণ পরিচালনায় এ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি মাইক্রোসফট টিমস, মাইক্রোসফট স্ট্রিম, মাইক্রোসফট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং কুইজ, গ্রেডবুক ও অ্যাসাইনমেন্টের জন্য মাইক্রোসফট ফর্মস ব্যবহার করছে।

এ নিয়ে মাইক্রোসফট বাংলাদেশ, ভুটান, ব্রুনাই ও নেপালের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আফিফ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গত কয়েক মাসে আমাদের শিক্ষাদান ও শেখার পদ্ধতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পাঠক্রমের ক্ষেত্রে কার্যকর নতুন পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ও স্থায়ী প্রভাব ফেলবে। ভার্চুয়াল শিক্ষণের মাধ্যমে আমরা নতুন স্বাভাবিকতার দিকে যাচ্ছি, তাই বিভিন্ন উপায়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এ ডিজিটাল বিশ্বে সংযুক্ত, সম্পৃক্ত ও নিরাপদ রাখার বিষয়টি এখন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। মাইক্রোসফটের প্রযুক্তি ব্যবহার করে এআইইউবি যেভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে তা আমাদের জন্য আনন্দের। এ বিষয়টি আমাদের বর্তমান প্রজন্ম ও ভবিষ্যৎ নেতৃবৃন্দদের অনেক কিছু শিখতে ও অর্জনে সহায়তা করবে।’

মাইক্রোসফট অ্যাপেকের সাউথ ইস্ট এশিয়া নিউ মার্কেটসের জেনারেল ম্যানেজার সুক হুন চিয়াহ বলেন, ‘মাইক্রোসফট ৩৬৫ এডুকেশন ব্যবহার করে বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শতভাগ ভার্চুয়াল পাঠদানের মাধ্যমে তেরো হাজার শিক্ষার্থীর দুই হাজারেরও অধিক কোর্স পরিচালনা করায় এআইউবিকে ধন্যবাদ। আমাদেরও প্রত্যাশা, এ বিষয়টি অন্যান্য সকল ইনস্টিটিউটকেও অনুপ্রাণিত করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃপক্ষকে উজ্জীবিত করার পাশাপাশি, প্রযুক্তি পাঠক্রম রূপান্তরে ভূমিকা রাখবে এবং ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষার্থীদের আরও ভালোভাবে তৈরি করতে সহায়তা করবে এবং তাদের সম্ভাবনার উপযুক্ত ব্যবহার ও প্রতিভা বিকাশেও সাহায্য করবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ডিজিটাল রূপান্তর সকল শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য পূরণে সমতা, সুযোগ ও ক্ষমতায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করে। আগামী দিনগুলোতে আরো সাফল্য অর্জনের জন্য প্রত্যেক ব্যক্তি ও প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতায়নই মাইক্রোসফটের আমাদের মূল লক্ষ্য।’