বেসিস জাপান ডেস্কের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু

টেকআলো প্রতিবেদক:
বেসিস জাপান ডেস্কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে ডেস্কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ভার্চুয়াল এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি। এন এম জিয়াউল আলম পিএএ, সিনিয়র সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ; ড. মোঃ জাফর উদ্দীন, সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়; ইতো নাওকি, রাষ্ট্রদুত, জাপান দূতাবাস; ড. আরিফুল হক, কমার্শিয়াল কাউন্সিলর, বাংলাদেশ দূতাবাস, টোকিও; ইউহো হায়াকাওয়া, কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ, জাইকা; ইউজি অ্যান্ডো, কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ, জেট্রো উক্ত অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগদান করে বক্তব্য রাখেন। বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক, সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন কার্যক্রম ও বাণিজ্য সম্ভাবনা বিষয়ে একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বেসিসের প্রাক্তন সভাপতি মাহবুব জামান । ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সমাপনী বক্তব্য রাখেন, বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বেসিস জাপান ফোকাস গ্রুপ-এর আহবায়ক এবং বেসিসের পরিচালক রাশাদ কবির।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান ও পুনর্গঠনে জাপানের অবদানের ভূয়ষী প্রশংসা করেন। উভয় দেশের পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের বাণিজ্য সম্প্রসারণে বেসিস জাপান ডেস্ক এর উদ্যোগকে স্বাগত জানান।তিনি বলেন, জাপানে বাজারে আমাদের ব্যবসা প্রসারের জাপানি ভাষা ভালোভাবে রপ্ত করা প্রয়োজন। এজন্য তরুণ উদ্যোক্তাদের জাপনি ভাষা শেখার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সফটওয়্যার একটি অদৃশ্য পণ্য হলেও সবসময় এমনকি করোনা মহামারির এই সময়েও এর প্রয়োজনীয়তা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামীতে তথ্য প্রযুক্তিখাত দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত হিসেবে পরিচিতি পাবে এবং এ খাতে বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বেসিস জাপান ডেস্কের পাশাপাশি জাপানের টোকিওতেও একটি বাংলাদেশ ডেস্ক খোলার ব্যাপারেও অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তিনি বেসিস-এর প্রতি আহ্বান জানান। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা প্রস্তাব আকারে পেশ করার জন্য বেসিস সভাপতিকে পরামর্শ দেন এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেন, জাপান বাংলাদেশের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বন্ধু ও উন্নয়ন সহযোগী। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের প্রকৃত উন্নয়নে বেসিস জাপানের আইটি মার্কেট অন্বেষণ এবং বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগের সুবিধার্থে গত কয়েক বছর ধরে কাজ করছে। বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে জাপানে বাংলাদেশের আইটি শিল্পের রফতানি বাড়িয়ে তুলতে এই ডেস্ক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। জাপানের আইটি উদ্যোক্তাদের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নে বেসিস কর্তৃক গৃহিত বিভিন্ন কার্যক্রমের উধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, বেসিস জাপানের বাজারে বাংলাদেশী আইটি কোম্পানিগুলোর অবস্থান ও আস্থা তৈরিতে গত কয়েক বছর ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বেসিস জাপান ডেস্ক এর এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান।

বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর তাঁর বক্তব্যে বলেন, বেসিস জাপান ডেস্ক জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসার একটি কার্যকরি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। ইতিমধ্যে প্রায় ৭০টি বেসিস সদস্য প্রতিষ্ঠান জাপান ডেস্কে মাসিক ফি প্রদানের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই ডেস্ক বেসিস সদস্যদের জাপানে ব্যবসা সম্প্রসারণে এবং জাপানি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশ অফশোর ডেভেলপমেন্ট সেন্টার স্থাপনে উৎসাহিত করবে।

বক্তাগণ তাঁদের বক্তৃতায় বেসিস জাপান ডেস্ক চালুর এই উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বেসিসকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। জাপান এবং বাংলাদেশের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বাণিজ্য সম্প্রসারণে বেসিস জাপান ডেস্ক কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে বক্তাগণ প্রত্যাশা করেন। জাপানে বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতকে তুলে ধরা এবং জাপান থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন বাণিজ্য সম্পর্কিত বিষয়ে বেসিস জাপান ডেস্ক সমন্বয়কারীর ভূমিকা পালন করবে।করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

উল্লেখ্য “বেসিস জাপান ডেস্ক” বিশেষ ভাবে জাপান মার্কেটের উপর কাজ করবে । এই ডেস্ক এর কাজের অংশ হিসেবে থাকবে বি টু বি ম্যাচমেকিং; জাপানী আইটি কোম্পানির সাথে সংযোগ স্থাপন; জাপান মার্কেট এর উপর গবেষণা; জাপানে অনুষ্ঠিত সকল ইভেন্টে অংশগ্রহণ; জাপানী ব্যবসা এবং সংস্কৃতির উপর গ্রুমিং সেশন; জাপান হতে আগত ব্যবসার নতুন নতুন সুযোগ সম্পর্কে জানানো ইত্যাদি। এ সকল পদক্ষেপ জাপানে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর ব্যবসা সম্প্রসারণ করবে এবং এই খাত থেকে রপ্তানি আয় বহুলাংশে বৃদ্ধি করবে। এই ডেস্কের সাথে যোগাযোগের জন্য একটি নির্দিষ্ট ইমেল অ্যাড্রেস ও ফোন নাম্বার থাকবে।