বিএফআইইউ-এর সঙ্গে ‘নগদ’-এর কমপ্লায়েন্স মিট-২০২০

টেকআলো প্রতিবেদক:
দ্রুতবর্ধনশীল ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস খাতের টেকসই উন্নয়নে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’।
শনিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ‘নগদ’ আয়োজিত দিনব্যাপী এক অনুষ্ঠানে “দীর্ঘস্থায়ী ব্যবসায়িক সাফল্যে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ কর্মকাণ্ডের ভূমিকা” শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা এবং ওয়ার্কশপে বিএফআইইউ-এর শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, ‘নগদ’-এর জন্য মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ কার্যক্রম পরিচালনা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সামনের দিনে পরিস্থিতির আরো উন্নতি হবে বলেও আশা করেন তারা।
মূলত মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সার্বিক কার্যক্রম জোরদার করণের অংশ হিসেবে ‘নগদ’ কর্মকর্তাবৃন্দের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি ছিল এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য। অনুষ্ঠানে দেশের দ্বিতীয় শীর্ষ ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা অংশ নেন। তাছাড়া বিএফআইইউ এবং ডাক বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও এতে অংশ নেন।
মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সংস্থা বিএফআইইউ মূলত বাংলাদেশে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে দৃঢ় ভূমিকা পালন করে এবং বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে আর্থিক ক্ষেত্রের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএফআইইউ প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএফআইইউ’র ডেপুটি হেড মো. ইস্কান্দার মিয়া এবং বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সিরাজউদ্দিন।
তাছাড়া বিএফআইইউ-এর মহাব্যবস্থাপক মো. শওকাতুল আলম এবং ‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক অতিথি হিসেবে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ‘নগদ’-এর চিফ অ্যান্টি মানিলন্ডারিং কমপ্লায়েন্স অফিসার এবং নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
বিএফআইইউ প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশ এখন কমপ্লায়েন্ট দেশ। আর দেশে কোনো সন্দেহভাজন লেনদেন হচ্ছে কিনা সেটি বিএফআইইউ–কে জানানোর মাধ্যমে ‘নগদ’ বা এমন আরো আর্থিক প্রতিষ্ঠান সরকারের গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করছে, যার মাধ্যমে তারা দেশের সেবাও করছে।
বিএফআইইউ বাংলাদেশ ডিজিটাল আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের পাশাপাশি এই সেক্টরের উন্নতি সাধনের বিষয়ে আন্তরিক এবং বদ্ধ পরিকর।
বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন বলেন, উদ্ভাবনী সেবার মাধ্যমে ‘নগদ’ শুরু থেকেই দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে আর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় ‘নগদ’-এর প্রতিটি লেনদেন-ই এখানে নিরাপদ।
‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, প্রথম দিন থেকেই ‘নগদ’ ডিজিটাল কেওয়াইসি এবং অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিডার বা ওসিআর-এর মতো সফটওয়ার ব্যবহার করার কারণে প্রতিটি গ্রাহকের পরিচয় নিশ্চিত করা আছে। সুতরাং ‘নগদ’-এ মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থাপনার প্রযুক্তিগতভাবে সহজতর হয়েছে।
‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক আরও বলেন, লেনেদের প্রতিটি পর্যায়ে প্রযুক্তির ব্যবহার করা হলে অপরাধ ও অপরাধীর পেছনে ছোটা সহজ হয়। আর ‘নগদ’ যেহেতু শুরু থেকেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করছে সুতরাং নজরদারি বাড়ালেই অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।
দিনের দ্বিতীয় ভাগে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে বিএফআইইউ-এর পক্ষ থেকে তিনটি প্রেজেন্টেশন দেন বিএফআইইউ-এর মহাব্যবস্থাপক মো. শওকাতুল আলম, যুগ্মপরিচালক মো. মাসুদ রানা এবং যুগ্মপরিচালক গাজী মনির উদ্দিন। দিনের প্রথম ভাগে মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ে কী নোট প্রেজেন্টেশন দেন বিএফআইইউ-এর উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাহবুব আলম।
এসব প্রেজেন্টেশনে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সংক্রান্ত আইন ও বিধি বাস্তবায়নে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর করণীয় ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ বিষয়ে বিএফআইইউ ‘নগদ’-এর কর্মকর্তাদের অবহিত করেন।
একই সঙ্গে ‘নগদ’-এর পক্ষ থেকে ডিজিটাল লেনদেনের স্থায়ী ও দ্রুতবর্ধনশীল উন্নয়নের জন্য মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপের কথা জানানো হয়।