বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা, জেলহত্যা এবং ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা একই সূত্রে গাঁথা : মোস্তাফা জব্বার

টেকআলো প্রতিবেদক:
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা, জেল হত্যা এবং বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ২১বার হত্যা চেষ্টা একই সূত্রে গাঁথা। এইসব প্রচেষ্টার পেছনে ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য ছিলো বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ধ্বংস করা, বাংলা ভাষা, বাঙালী জাতি ও সংবিধানের চার মূলনীতি ধ্বংস করে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। যারা পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট, তেশরা নভেম্বর বা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ঘটিয়েছে তারা এখনো দেশে বিদেশে বসবাস করে ঘাপটি মেরে থেকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বঙ্গবন্ধু আদর্শের প্রতিটি সৈনিককে এই পরাজিত অশুভ শত্রুদের রুখতে সচেতন থাকতে হবে।

মন্ত্রী ২৭ আগস্ট ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর ৪৫তম শাহাদত বার্ষীকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড শাখা আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এই সতর্কতা উচ্চাররণ করেন।

বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড শাখার প্রধান উপদেষ্টা টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও আইইবি প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো: আবদুস সবুর, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো: নুরুজ্জামান বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড শাখার নেতা প্রকৌশলী রনক আহসান।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা কেবলমাত্র স্বাধীনতা্ই দেননি, তিনি যুদ্ধের ধ্বংশস্তুপের ওপর দাঁড়িয়েও আইটিইউ-ইউপিইউর সদস্যপদ এবং বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ডিজিটালাইজেশনের বীজ বপন করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর রক্তের সুযোগ্য উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৬ বছরের দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বে সেই বীজ আজ বিশাল মহিরূহে রূপ নিচ্ছে। ২০০৮ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচী বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা কর্মসূচীর রূপরেখা। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের বাংলাদেশ বিশ্বে ডিজিটাইজেসন ও উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। করোনাকালেও গ্রামের মানুষটি পর্যন্ত উপলব্ধি করছে ডিজিটাল বাংলাদেশ না থাকলে বৈশ্বিক মহামারির এই ক্রান্তিলগ্নে মানুষের জীবনযাত্রা বিপন্ন হতো। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিস্ময়কর নেতৃত্বের একজন মহামানব। তাঁর নেতৃত্বের গুণাবলী বিশ্বের কোন নেতা অর্জন করতে পারেনি।বঙ্গবন্ধু দুটি অমূল্য রত্ন আমাদের জন্য রেখে গেছেন একটি স্বাধীনতা আর একটি হলো তার সুযোগ্য সন্তান। তিনি বলেন, পঁচাত্তর থেকে ৮১সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের এ দেশীয় দোসররা বঙ্গবন্ধু কন্যাকে দেশে আসতে দেয়নি। ৮১ সালে তিনি দেশে প্রত্যাবর্তনের পর ৯৬ সাল পর্যন্ত জনগণকে সংগঠিত করতে তিনি বঙ্গবন্ধুর পথে হেটেছেন।
আজকের এই বাংলাদেশের ভিত্তিপ্রস্তর ৯৬ সালে সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থাপন করেছিলেন উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশে রাজনীতিবিদদের মধ্যে তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি নিজের হাতে কম্পিউটার এবং ডায়াল আপ ইন্টারনেট ব্যবহার করেছেন। ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ আবার বাংলাদেশকে পিছিয়ে নেওয়া হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন করোনা পরিস্থিতিতেও আমাদের জীবনযাত্রা থমকে যায়নি।ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিকতায় ৪১ সালে জ্ঞান ভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার রূপকল্পই কেবল বাস্তবায়ন করছেন না তিনি ২১০০ সালের বাংলাদেশ রূপকল্প জাতিকে উপহার দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি প্রকৌশলী আবদুস সবুর বলেন, বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। টেলিকম, শিক্ষা, প্রকৌশল, চিকিৎসা এবং কৃষিসহ প্রতিটি সেক্টরের উন্নয়নের রূপকল্প তিনি তৈরি করে গেছেন।তিনি বেঁচে থাকলে বহু আগেই উন্নত দেশে রূপান্তর হতো।

সভাপতির বক্তৃতায় টেলিটক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে পিছিয়ে দেয়ার চেষ্ট করা হয়। তিনি দেশের অগ্রগতির অগ্রযাত্রায় বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ যে কোন ভূমিকা গ্রহণে বদ্ধপরিকর বলে তিনি উল্লেখ করেন। আলোচনা শেষে ১৫ আগস্টসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।