ফেইক নিউজ নিয়ন্ত্রণে সেমিনার

টেকআলো প্রতিবেদক:
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে ২১ জুন বিভাগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকে ফেইক নিউজ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক একটি অনলাইন সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সারা পৃথিবী এই মুহূর্তে করোনা মহামারীর মতো আরেকটি মহামারীতে ভুগছে। সংবাদ বিকাশের সর্বস্তরে ফেক নিউজ বা ভুয়া সংবাদের অস্তিত্ব থাকলেও ডিজিটাল যুগে তা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এর ফলে সামাজিক, রাজনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক ভাবে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফেইক নিউজ কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করে প্রযুক্তিকে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করা যায়, তারই পরিকল্পনা নির্ধারণ করতে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিশেষ অতিথি ছিলেন একই বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম । কর্মশালার কি নোট উপস্থাপন করেন আমেরিকার ফোর্ডহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেটা সাইন্স বিষয়ক সহকারী অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন। প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও প্রখ্যাত সাহিত্যিক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর পরিচালক এ্যাডিশনাল ডিআইজি তবারক উল্লাহ, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাবু, অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ও অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। সেমিনারটির আয়োজক ছিলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের কন্ট্রোলার অব সার্টিফায়িং অথরিটি (সিসিএ) কর্মশালাটি
সেমিনারে একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাবু বলেন, প্রতিষ্ঠিত সংবাদ মাধ্যমগুলো ফেইক নিউজের অনেক বড় ভিকটিম। কারণ ফেইক নিউজের দাপটে অথেনটিক নিউজ মানুষের চাহিদা মেটাতে পারছে না। কোন ইনসিডেন্টে ৫০ জন লোক হতাহত হলে মানুষ শুনতে চায় ৫০০ লোক হতাহতের কথা। এটা না পেলেই তারা সন্দেহ করে। ফেইক নিউজ নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সঠিক প্রয়োগ ঘটানো জরুরি বলেও তিনি মনে করেন। অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীও আইনের প্রয়োগের কথা বলেন। ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল মনে করেন, ফেক নিউজ বোঝার জন্য যে আটটি বিষয় পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন, একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে সেটা অসম্ভব। যদি এমন কোন প্রতিষ্ঠান বা সার্ভিস গড়ে তোলা যায় যে, যারা একটি নিউজের সত্য মিথ্যা যাচাই করে সঠিক তথ্য মানুষের সামনে উপস্থিত করবে, তাহলে নিউজ শেয়ারের আগে মানুষ একটা পরীক্ষা করার সুযোগ পাবে। অভিনেত্রী মেহজাবিন ফেক নিউজ ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন এবং অনলাইনে নারীদের ভার্নাবিলিটির কথা তুলে ধরেন। তাঁর মতে, মানুষ এখন যে ধরনের স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহার করছে, তাদের পদক্ষেপগুলো দ্রুত করার জন্য বাংলাদেশে তাদের অফিস স্থাপন করাটা গুরুত্বপূর্ণ। সেমিনারে একাধিক প্যানেলিস্ট দেশীয় সোশ্যাল মিডিয়া তৈরির বিষয়েও প্রস্তাব রাখেন।
প্রধান অতিথি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান যে, ফেইক নিউজ মোকাবেলায় তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি বিভাগ নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সচেতনতা মূলক কর্মকাণ্ড, সমাজের ডিজিটাল লিটারেসি বাড়াতে প্রকল্প গ্রহণসহ ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টের আওতায় ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সিকে কার্যকর করার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত ও আইনগত সহয়তার জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি হেল্পলাইন তৈরি ও ভুয়া সংবাদ নিয়ন্ত্রণের জন্য ফ্যাক্ট চেকিং সাইট তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করবে সরকার।