ফাইভজি প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখতে হবে – মোস্তাফা জব্বার

টেকআলো প্রতিবেদক :

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, প্রযুক্তির আধুনিক সংস্করণ ৫জি প্রযুক্তি আগামী দিনে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আইওটি, বিগডাটা, ব্লকচেইন অথবা রোবটিক প্রযুক্তি আগামীর পৃথিবীকে পাল্টে দিবে। এর ফলে ডিজিটাল শিল্প বিপ্লব অথবা রিভ্যুলিউশন ফোর পয়েন্ট জিরো বা আইআর ফোর সারা দুনিয়াতে মাতমে পরিণত হয়েছে। এ সম্পর্কে যথাযথভাবে জনগণকে অবহিত করতে এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে ব্যর্থ হলে আমরা পেছনে পড়ে যাব।
ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সাংবাদিক সমাজ বিশেষ করে আইসিটি সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহবান জানান মন্ত্রী। মন্ত্রী রাজধানীর গুলশানে স্পেকট্র কনভেনশন হলে গত শনিবার বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম ( বিআইজেএফ) এর নব-নির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অথিথির বক্তৃতায় এ আহবান জানান।


দেশে আইসিটি বিকাশে ট্রেডবডিসমূহ, ইন্ডাস্ট্রিজ এবং সাংবাদিকগণ অসাধারণ সহযোগিতা করে আসছে উল্লেখ করে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তির উৎকর্ষের ফলে প্রযুক্তির সাথে সাধারণ মানুষের সেতুবন্ধন রচিত হয়েছে। তবে প্রযুক্তিতে আমাদের সক্ষমতা সারা পৃথিবীকে সেই ভাবে পৌঁছাতে পারছি না -এটা একটা বড় দুর্বলতা। সমালোচনার পাশাপাশি সফলতার গল্পটাও ক্ষুরধার লেখনিতে তুলে আনতে হবে।
তথ্যপ্রযুক্তিখাতে মন্ত্রী হিসেবে গত ১৩ মাসের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মোস্তাফা জব্বার বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার মতো একজন প্রধানমন্ত্রী যে দেশে আছে সে দেশ প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকবে না। তিনি বলেন, গত দশ বছরে প্রযুক্তিতে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বাংলাদেশ সক্ষমতা অর্জন করেছে। ডিজিটাল বিপ্লবে বাংলাদেশ নেতৃত্বের জায়গায় পৌঁছুতে সক্ষম হয়েছে।
মন্ত্রী আইসিটি সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থার বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে। ‘বর্তমানে যে শিক্ষা ব্যবস্থাটা বিরাজ করে আমরা কী তার একটু আলোর পথ দেখাব না। আমি বিশ্বাস করি আমাদের সাংবাদিকগণ সেই দিকে নজর দিবেন। আমি আশা করব আপনাদের রিপোর্টে আরো বেশী করে ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জের কথা, সম্ভাবনার কথা উঠে আসবে’।


মন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে যখন ড্রাইভার বিহীন গাড়ী চলবে তখন কোন কোন দেশের জন্য তা আনন্দের হলেও আমাদের জন্য বেকারত্বের জন্য বোঝা হতে পারে।
রোবট যখন তৈরি পোষাক শিল্পে মানুষের পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে, অন্যদের জন্য তা আনন্দের কিন্তু আমাদের জন্য এ খাতে ৫ মিলিয়ন কর্মীর বেকারত্বের বোঝা বাড়ানোর জন্য উদ্বেগের, এটা আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। সে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের তৈরি থাকতে হবে,উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে অ্যাসোসিওর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ এইচ কাফি, ডেফোডিল গ্রুপের চেয়ারম্যান সবুর খান, বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির,আইএসপিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম,বিসিএসের পরিচালক শহিদ-উল- মুনির , বাক্য সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ, বেসিস এর সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এম শোয়েব চৌধুরী,ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বক্তব্য দেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিডিওএসএনের সাধারন সম্পাদক মুনির হাসান, আই পে এর সিইও জাকারিয়া স্বপন,সহজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিহা কাদির,ডেলের কান্ট্রি ম্যানেজার আতিকুর রহমান, পাঠাওয়ের বিপণন প্রধান সৈয়দা নাবিলা মাহবুব, শাওমির আঞ্চলিক বিপণন প্রধান জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বক্তৃতা করেন। এছাড়া বিআইজেএফের পক্ষে সভাপতি মোজাহেদুল ইসলাম ঢেউ, সাধারণ সম্পাদক হাসান জাকির, সহ-সভাপতি নাজনীন নাহার, সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিব রহমান বক্তব্য দেন।
পাশাপাশি বিআইজেএফ’র সিনিয়র সদস্য পল্লব মোহাইমেন, এ আর মাহমুদ হোসেন, মেহেদি হাসান পলাশ তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।


নবনির্বাচিত সভাপতি মোজাহেদুল ইসলাম অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘বিআইজেএফকে আরও শক্তিশালী এবং গতিশীল করতে প্রয়োজনীয় সব কিছুই করব।’ এজন্য সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
সাধারণ সম্পাদক হাসান জাকির বলেন, ‘বিআইজেএফকে আইসিটি সাংবাদিকবান্ধব সংগঠন হিসেবে রূপান্তরে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। যেন সাংবাদিকদের মধ্যে বিআইজেএফ উদাহরণ তৈরি করতে পারে। পাশাপাশি আইসিটি সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা প্রদানেও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বিআইজেএফ।
এ সময় তিনি তার বক্তব্যে বিআইজেএফ সাংবাদিকদের মনোন্নয়নে দেশে ও বিদেশে প্রশিক্ষণ, ফেলোশিপ প্রদান, কল্যাণ তহবিল গঠনে সহায়তাসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন।মন্ত্রী তার বক্তব্যে এসব দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।
বিআইজেএফ ২০১৯-২০ কার্যনির্বাহী পরিষদের অন্যান্য পদে বিজয়ীরা হলেন, যুগ্ন-সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সোহাগ, ( আলোকিত বাংলাদেশ) গবেষণা সম্পাদক জান্নাতুল ইসলাম রাহাদ ( ডেইলি সান) কোষাধ্যক্ষ এনামুল করিম, ( ডিজিটাল সময়) এবং নির্বাহী সদস্য মিজানুর রহমান সোহেল (যুগান্তর) ও রাহিতুল ইসমান রুয়েল (কম্পিউটার জগৎ)।
আয়োজনের গোল্ড স্পন্সর ছিল ডিজিটাল অর্থ লেনদেন প্লাটফর্ম নগদ এবং কো-স্পন্সর ছিল শাওমি, পাঠাও এবং সহজ। পুরো অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে ঢাকা লাইভ।