দ্রুত গতির ইন্টারনেট সংযোগ সকল ই-সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিবে : বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

টেকআলো প্রতিবেদক:
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, দ্রুত গতির ইন্টারনেট সংযোগ বিদ্যমান ও আগত সকল ই-সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে । ইন্টারনেট আজ বিশ্বকে একটি গ্রামে পরিণত করেছে । বাংলাদেশেও গ্রাম পর্যায় ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ প্রশংসনীয় । ইন্টারনেট ব্যবহার করে ব্যাংকিং সেবায় পেমেন্ট সিস্টেম সচল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে । ফলে সকল অর্থনৈতিক কার্যক্রম ইন্টারনেট কেন্দ্রিক হবে । এর জন্য প্রয়োজন নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ । ৯৭ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ এখন পাচ্ছে । মুজিব বর্ষেই শতভাগ এলাকা বিদ্যুতায়নের আওতায় আসবে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ২৫ জুলাই্ অনলাইনে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে কেরানীগঞ্জের আটটি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ প্রদানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক ও ঢাকা -২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী অনলাইনে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে কেরানীগঞ্জের আটটি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ প্রদানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন । তিনি বলেন , কেরানীগঞ্জে হাইটেক পার্ক নির্মাণ অত্র এলাকার তরুণ-তরুণীদের আরও ডিজিটালাইজড করে সম্মানজনক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে । আজ আটটি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা হলেও বাকি চারটি ইউনিয়নে দ্রুত সংযোগের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের পূর্বেই কেরাণীগঞ্জের সকল প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহক পর্যায়ে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করে কেরাণীগঞ্জবাসীদের জন্য অনলাইন সেবা উন্মুক্ত করতে চাই । স্বল্প দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করে এবং গ্রাম-শহরের বৈষম্য সমতা বিধান করে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃজন করবে। যা ২০৪১ সালে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এসময় তিনি, বাংলাদেশে অনলাইন সেবার বিস্তারে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়-এর অবদান স্মরণ করে বলেন, তাঁর পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানেই বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেছেন, ইনফো-সরকার ( ৩য় পর্যায় ) প্রকল্পের মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায় ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি প্রান্তিক এলাকায় ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। ফলে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার অর্থনৈতিক কার্যক্রমের অন্যতম হাবে পরিণিত হচ্ছে। সকলের জন্য ইন্টারনেট সেবা, দক্ষ জনবল গঠন, ডিজিটাল সেবা বৃদ্ধি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রযুক্তি কে শিল্প হিসেবে বিবেচনা করে সুনির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে কাজ করছি।
পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এর তত্ত্বাবধানে বিগত ১১ বছর দেশে ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলার কারণে গত ৫ মাসে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন এমনকি কোরবানির গরুর হাট পর্যন্ত ডিজিটাল প্লাটফর্মে চলে এসেছে।তাই এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ আর স্বপ্ন বা কল্পনা নয়, বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রযুক্তির কল্যাণে করোনা মহামারী কালীন সময়ে ঝড় ও বন্যাকবলিত মানুষকে সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে আইসিটি খাতে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন এ লক্ষ্য মাত্রা অর্জনে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী তার নির্বাচনী এলাকা নাটোরের সিংড়ায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করার জন্য বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন বিদ্যুৎ আর ইন্টারনেট আধুনিক সভ্যতার অন্যতম নিয়ামক।

উল্লেখ্য,ইনফো-সরকার ৩য় পর্যায় প্রকল্পের আওতায় প্রান্তিক গ্রামীণ জনপদে দ্রুতগতির ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড সংযোগ প্রদানের জন্য ২,৬০০টি ইউনিয়নে পয়েন্ট অফ প্রেজেন্স (পিওপি) স্থাপনএবং১৯,৫০০ কি.মি. অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল স্থাপনের মাধ্যমে উচ্চগতির নেটওয়ার্ক অবকাঠামো স্থাপন করা হচ্ছে।এছাড়াও ২৬০০ ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের মাধ্যমে দ্রুতগতির ইন্টারনেট অবকাঠামো স্থাপনের মাধ্যমেবাংলাদেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে ২৬,০০০ সরকারী অফিসে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রদানকরাসম্ভবহবে। ইতোমধ্যেপুলিশের ১হাজার টি অফিসের মধ্যে VPNসংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। দেশের ৬০ শতাংশ জনগণের ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নিশ্চিতকরা সম্ভবহবে। জাতীয় আইসিটি নীতি ২০১৫ এর লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের গ্রামীণ সম্প্রদায়ের জন্য ই-সেবাগুলিতে (e-Service) অনুপ্রবেশ নিশ্চিতকরণ, শহর এবং গ্রামের ডিজিটাল বৈষম্য দূরীকরণ এবং নারী-পুরুষের সমতা বাস্তবায়িত হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে এবংইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে (ইউডিসি) হাই-স্পীড ইন্টারনেট সংযোগপ্রদান, কারিগরি জ্ঞান বিতরনের মাধ্যমে যোগ্যতা বৃদ্ধিএবং আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিহবে। ২০২১ সালে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গ্রাহক ২ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ এ উন্নীত হবে। ফলে জিডিপি ১ শতাংশ বৃদ্ধিপাবে।

ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক মোঃ শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম,বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব ও কেরনীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।পরে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি উদ্বোধন করেন।