ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি সমৃদ্ধির হাতিয়ার -মোস্তাফা জব্বার

টেকআলো প্রতিবেদক:
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ শুধু চতুর্থ শিল্প বিপ্লবই নয়, ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার। আমরা নতুন প্রজন্মকে যদি ডিজিটাল দক্ষতা দিতে পারি, যদি তাদেরকে মানব সম্পদে রূপান্তর করতে পারি তাহলেই আমরা বিশ্বে ডিজিটাল বিপ্লবের নেতৃত্ব দিতে পারব। দেশের অভাবনীয় অগ্রগতির বড় ভিত্তি রচনা করেছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ হচ্ছে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমূক্ত বৈষম্যহীন একটি উন্নত জাতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম।
মন্ত্রী ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এক হোটেলে দি ইকনোমিক টাইমস গ্রুপের গ্লোবাল এন্টারপ্রাইজ টেকনোলজি ফোরাম আয়োজিত ‘ভিশন ডিজিটাল বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, আমাদের এই জনগোষ্ঠীকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে পারলে তাদেরকে দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ হিসেবে দেখতে পাব। ভারত, নেপাল কিংবা ভুটানের অবস্থাটাও কাছাকাছি। এই অঞ্চলের ভূ- প্রাকৃতিক অবস্থা কেবল সামঞ্জস্যপূর্ণই নয় বরং এখানকার মানুষ মেধায় পৃথিবীতে অন্যতম সেরা, বার বার আমরা তা প্রমাণ করেছি বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী মানবসভ্যতার পরিবর্তনের চিরায়ত নিয়মেই বিদ্যমান সভ্যতার ভোগৌলিক পরিবর্তনের সময় এসেছে উল্লেখ করে বলেন, মেধা বিকাশের সুযোগ, মানবসভ্যতাকে ব্যবহার করার সুযোগ এবং কাজ করার সুযোগ সব কিছু মিলে এই অঞ্চলের সম্ভাবনা অপার। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গত দশ বছরে বাংলাদেশে শতকরা ১৮৮ ভাগ জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি অর্জন করে প্রবৃদ্ধি অর্জনকারি বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। ২০০৮ সালের মাত্র ৫৩০ ডলার মার্কিন ডলার মাথা পিছু আয়ের বাংলাদেশ দশবছরে ১৯০৯ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
মন্ত্রী উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দু‘বছরে এই অঞ্চলের শক্তিশালী অর্থনীতির দেশকে বাংলাদেশ পিছনে ফেলবে উল্লেখ করে বলেন, ২০০৮ সালের দরিদ্রসীমা ৪৪ ভাগ থেকে দশবছরে ২২ ভাগে নামিয়ে আনা হয়েছে। আমরা ৫জি প্রযুক্তি পরীক্ষা সম্পূর্ণ করেছি। ২০২৩ সালের মধ্যে ৫জি চালু করার রোডম্যাপ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
কম্পিউটারে বাংলা ভাষার জনক মোস্তাফা জব্বার বলেন. ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্প্রসারণের পাশাপাশি এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল রূপান্তরের ভয়াবহ বিপদ আমাদের চারপাশে অবস্থান করছে। যত বেশী ডিজিটাল করছি ততবেশী ডিজিটার নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা এমন একটি বিষয় যে বিষয়টি একটি দেশ একটি ব্যক্তি অথবা একটি জনগোষ্ঠী এককভাবে তা সমাধান করতে পারে না। ফলে আমি মনে করি আমাদের রাষ্ট্রের ভিতরে এবং রাষ্ট্রের বাহিরে আন্তর্জাতিভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের সহযোগিতা দরকার। পারস্পারিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিধান করতে হবে। ব্যক্তিগত তথ্য থেকে শুরু করে ব্যাংকের টাকা পর্যন্ত অনিরাপদ। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশে তৃণমূল জনগোষ্ঠীর মধ্যে ২০০টি ডিজিটাল সরকারি সেবা পৌছে দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশে ২৭৬০ টি ডিজিটাল সেবা ডিজিটাল সেবার প্রয়োজনীয়তা চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মেধ্য ৯০০ সরকারি সেবা জনগণের সাথে সম্পর্কযুক্ত। ২০২১ সালে মধ্যে ৭০০ সেবা জনগণের গোড়গোড়ায় পৌঁছে দেয়া হবে। স্মার্ট ফোনেই সে সেবা প্রদানে সক্ষম হবো। ৫ হাজার ইউনিয়ন এবং দশ হাজার পোস্ট অফিস সকল সরকারি ডিজিটাল সেবা দিতে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা‘র ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচিকে পৃথিবীতে একটি অনুকরণীয় কর্মসূচি উল্লেখ করে বলেন, দেশের প্রয়োজনে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করব, বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার এই সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতেই হবে।
অনুষ্ঠানে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন বিষয়ে আমাজন ইন্টারনেট সার্ভিসের ভারত ও সার্ক অঞ্চলের হেড অব জিওগ্রাফিক ইনকিউবেশন চন্দ্র বালানি বক্তৃতা করেন।