জার্মানিতে ডয়চে টেলিকমের ফাইভজি উন্মোচন

টেকআলো প্রতিবেদক:
টেলিকম ডয়চেল্যান্ড সম্প্রতি জার্মানিতে তাদের ফাইভজি নেটওয়ার্ক উন্মোচন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এ নেটওয়ার্ক চালু হওয়ার ফলে এক কোটি ৬ লাখ মানুষ এক হাজারেরও অধিক স্থান থেকে উচ্চগতিসম্পন্ন এ সেবা উপভোগ করতে পারবেন।
ডয়চে টেলিকম (ডিটি) গ্রুপের জার্মানির ইউনিট জানিয়েছে, ১২ হাজার ফাইভজি অ্যান্টেনা ইতোমধ্যেই কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহৃত হচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানটি আশা করছে, চলতি বছরের শেষের দিকে ফাইভজি অ্যান্টেনার সংখ্যা ৪০ হাজারে গিয়ে দাঁড়াবে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ বা চার কোটি মানুষকে এ সেবার আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে ডয়চে টেলিকমের(ডিটি)।
জার্মানির দ্বিতীয় টেলিকম অপারেটর হিসেবে ফাইভজি সেবা চালু করেছে ডয়চে টেলিকম। এর আগে, গত বছরের জুলাই মাসে ভোডাফোন জার্মানি বাণিজ্যিকভাবে ফাইভজি সেবা চালু করে।
টেলিফোনিকা ডয়চেল্যান্ড বলছে, চলতি বছরের শেষ ছয় মাসে মিউনিখ, ফ্র্যাঙ্কফুট, কোলন, বার্লিন ও হামবুর্গে ফাইভজি নেটওয়ার্ক উন্মোচনের পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। এবং বছর শেষে এক কোটি ৬০ লাখ মানুষকে এ নেটওয়ার্ক সুবিধার আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
টেলিকম ইতোমধ্যেই ‘ফাইভজি- রেডি’ ম্যাজেন্টামোবিল ট্যারিফ প্রচার শুরু করেছে এবং প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ গ্রাহক এতে সাইন আপ করেছে।
ফাইভজি ব্যবহারের জন্য স্পেকট্রাম সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যও জানিয়েছে ডয়চে টেলিকম (ডিটি) গ্রুপের জার্মানির ইউনিটটি। অন্যান্য প্রতিযোগীর মতো এ প্রতিষ্ঠানটিও গত বছর ফাইভজি স্পেকট্রাম নিলামে অংশ নেয়। এবং দুই গিগাহার্টজ ব্যান্ডের ৪০ মেগাহার্টজ পেয়ারড স্পেকট্রামে এবং ৩.৬ গিগাহার্টজ পরিসরের একটি ৯০ মেগাহার্টজ ব্লকে ২.২ বিলিয়ন ইউরো (২.৫ মিলিয়ন ডলার) ব্যয় করেছে।
এছাড়াও, অপারেটরটি বলেছে তারা ২.১ গিগাহার্টজ ব্যান্ডে ১৫ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম ব্যবহার করছে, যার মধ্যে পাঁচ মেগাহার্টজ পূর্ববর্তী থ্রিজি স্পেকট্রাম থেকে এসেছে এবং ১০ মেগাহার্টজ অন্য সেবাদাতার থেকে নেয়া হয়েছে।
টেলিকম ডয়চেল্যান্ড ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, চাহিদা অনুযায়ী এলটিই এবং ফাইভজি ব্যবহারকারীদের জন্য স্পেকট্রাম ব্যবহারে প্রতিষ্ঠানটি ডায়নামিক স্পেকট্রাম শেয়ারিং (ডিএসএস) ব্যবহার করছে।
ডয়েচে টেলিকম হুয়াওয়ের বিতর্কিত বিষয় এবং ফাইভজি নেটওয়ার্কে চীনের এ ভেন্ডরের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের বিষয়ে নজর দিতে বাধ্য হয়।
শুধুমাত্র জার্মানিতেই রেডিও অ্যাক্সেস নেটওয়ার্কের (আরএএনএস) ক্ষেত্রে দেশটি দুটি সরবরাহকারীর ওপর নির্ভর করে- একটি হুয়াওয়ে এবং অন্যটি সুইডেনের এরিকসন। অপারেটরটি বলছে, আরএনকে ফোরজি থেকে ফাইভজিতে উন্নীত করার জন্য উভয় ভেন্ডরের সাথে নতুন চুক্তি সম্পাদন করেছে। জানিয়েছে, এক প্রস্তুতকারী থেকে অন্য প্রস্তুতকারীর উপকরণ নিয়ে আরএএনকে উন্নীত করা ‘কারিগরিভাবে অসম্ভব’।
হুয়াওয়ে ডয়চে টেলিকমকে তাদের মোবাইল ‘কোর'(যেখানে নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জমা থাকে তার নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র)এ ব্যবহৃত পণ্যগুলি সরবরাহ করে। জানা গেছে ডয়চে টেলিকম যদি চীনা ভেন্ডরকে বাদ দিতে চায়, তবে সেক্ষেত্রে পাঁচ বছর প্রয়োজন হবে এবং তাতে খরচ হবে আনুমানিক ৩.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ডয়চে টেলিকম আরো উল্লেখ করেছে যে, ‘মাঝারি মেয়াদে নেটওয়ার্কের বৃহত্তর উপাদান বৈচিত্র্য নিশ্চিত করতে এবং আরো ম্যানুফ্যাকচারার প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ে’ তারা এই ‘তথাকথিত ওপেন আরএন উদ্যোগ’ সমর্থন করে।